দ্রুত ও সময়ানুগ রোগনির্ণয়ে সফলতাই স্তন ক্যানসার চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি। এ জন্য সবার আগে চাই নারীরসচেতনতা। ৩৫ বছর পার হয়ে গেলেই নিজের স্তন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে প্রত্যেক নারীকে। নিজেকে নিজে পরীক্ষা করা এবং স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সম্যক অবহিত থাকা হচ্ছে এই সচেতনতার প্রথম ধাপ। জেনে নেওয়া দরকার স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কেও। পরিবারে কারও স্তন ক্যানসারের ইতিহাস, অত্যধিক ওজন, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, হরমোন ট্যাবলেট সেবনের ইতিহাস, মাসিকের ইতিহাস—এগুলো জানা জরুরি। এর আগে স্তনে কোনো সমস্যা হয়েছিল কি না বা কোনো পরীক্ষা, যেমন—ম্যামোগ্রাফি করা হয়েছিল কি না। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়।এরপর দরকার একটি সার্বিক ক্লিনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট।স্তনে যেকোনো সমস্যা বা সন্দেহজনক পরিবর্তনে প্রথমেই শরণাপন্ন হতে হবে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের। তিনি পূর্ণ ইতিহাস জানার পাশাপাশি আপনাকে বসিয়ে এবং শুইয়ে দুবার পরিপূর্ণভাবে দুটি স্তন ও দুটি বগল পরীক্ষা করবেন। যেকোনো সন্দেহজনক পরিবর্তন দেখলে তিনি শরণাপন্নহবেন ল্যাবরেটরি পরীক্ষার।
1. প্রথমেই আসে ব্রেস্ট ইমেজিং। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেম্যামোগ্রাফি ও আলট্রাসাউন্ড—এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ।ম্যামোগ্রাফি হচ্ছে স্তনের এক ধরনের বিশেষ এক্স-রে,যাতে সচরাচর ব্যবহূত এক্স-রের তুলনায় কম তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে ম্যামোগ্রাফি স্তন ক্যানসারের জন্য একটি শক্তিশালী ও বহুল ব্যবহূত স্ক্রিনিং পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। ৪০-পরবর্তী নারীদের নিয়মিত বার্ষিক ম্যামোগ্রাফির আওতায় আনা হয়েছে অনেক দেশে। তবে কম বয়সী নারী, যাঁদের স্তনগ্রন্থি আঁটোসাঁটো থাকে এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা, যাঁদের তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আছে,তাঁদের জন্য ম্যামোগ্রাফির বদলে আলট্রাসাউন্ড শ্রেয়তর। কেননা, এতে তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা হয় না। তবে সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে ৩৫-ঊর্ধ্ব নারীদের জন্য একই সঙ্গে ম্যামোগ্রাফি ও আলট্রাসাউন্ড সবচেয়ে ভালো ধারণা দিতে সক্ষম। তবে লক্ষ রাখবেন, দুটি পরীক্ষাই যেন একই সময়ে বা কাছাকাছি সময়ে করা হয়, যা তুলনাযোগ্য হতে পারে। স্তনের জন্য হাই ফ্রিকোয়েন্সি লিনিয়ার প্রোব আলট্রাসাউন্ড রোগনির্ণয়ে বেশি কার্যকর।
2. বায়োপসি বিভিন্ন ধরনের হয়। চাকা বা পিণ্ড কত বড় ও কোথায় অবস্থিত, তার ওপর নির্ভর করে কোনটি ব্যবহার করা হবে। যেমন—কোর বায়োপসি হচ্ছে এমন একটি আধুনিক পদ্ধতি, যেখানে একটি সূক্ষ্ম সুচের (নিডল গান) মাধ্যমে চাকা বা পিণ্ড থেকে খানিকটা টিস্যু এনে দেখা হয় তার অস্বাভাবিকতা। সময় লাগে ১৫ মিনিট। এ সময় নির্ভুল জায়গায় পৌঁছাতে আলট্রাসাউন্ডের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। অপরদিকে কোনো চাকা চামড়ার বা স্তনবৃন্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আটকে থাকলে বা চামড়ায় কোনো ক্ষত বা ঘা থাকলে পাঞ্চ বায়োপসি করতে হয়। একজন দক্ষ প্যাথলজিস্ট এই বায়োপসি রিপোর্টটি করার সময় এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত মাত্রা বা স্কেল ব্যবহার করেন। রেডিওলজিস্টও একই সঙ্গে তাঁর ম্যামোগ্রাফি ও আলট্রাসাউন্ডের রিপোর্টের ক্ষেত্রে মাত্রা বা স্কেল ব্যবহার করবেন। আর যে চিকিৎসক রোগীকে দেখেছেন, তাঁর তো নিজস্ব ক্লিনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট আছেই। এই ত্রয়ী বিশেষজ্ঞ অবশেষে সামগ্রিক বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবেন রোগটি আসলে কী, তা কোন পর্যায়ে আছে এবং কোন ধরনের চিকিৎসা রোগীর প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতামতে গরমিলথাকলে প্রয়োজনে তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো পরীক্ষার পুনরাবৃত্তিও করতে পারেন বা আরও আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্য নিতে পারেন। বিশ্বে স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের এই যুগপৎ প্রচেষ্টার নাম ট্রিপল অ্যাসেসমেন্ট বা ত্রয়ী পর্যবেক্ষণ নীতিমালা।
যদি ক্যানসার ধরা পড়ে, তবে তা স্তনের কতটুকু দখল করে আছে, অন্য স্তন বা আশেপাশের গ্রন্থিগুলোর অবস্থাকী, কতটুকু ক্ষতি হয়েছে এবং টিউমারের নিরাপদ সীমানা কতটুকু—এসব জটিল বিষয় বিবেচনায় এনে সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। এত দিন স্তনের সার্জারি বলতে মাসটেকটমি (সম্পূর্ণ স্তন অপসারণ), র্যাডিকাল মাসটেকটমি (স্তনসহ গ্রন্থিগুলোর অপসারণ), ব্রেস্ট কনসার্ভি সার্জারি (স্তন সংরক্ষণ সার্জারি) প্রভৃতিকেই বোঝাত। কিন্তু এখন আধুনিক বিশ্বে চলে এসেছে অনকোপ্লাস্টিক টেকনিক, যার মাধ্যমে অকারণ বিকৃতি না করে, এমনকি তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার আকারের টিউমারও নিরাপদে স্তন সংরক্ষণ করেই অপসারণ করা সম্ভব। এ ছাড়া সার্জারি ও রেডিওথেরাপির পর বিকৃতি রোধ করতে বলিউম রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির সাহায্য নেওয়া হয়। তবে আধুনিক অনকোপ্লাস্টিক টেকনিক একই সঙ্গে ক্যানসার অপসারণ ও রিকনস্ট্রাকশন বা বিকৃতি রোধের সুযোগ এনে দিয়েছে।
সংকোচ ও অবহেলা নারীকে নিজের স্তন বিষয়ে কুণ্ঠিত করে রাখে। নিজের সমস্যাগুলো গোপন করা, প্রকাশ করতে দেরি করা বা প্রকাশ করলেও তা পরিবার ও পারিপার্শ্বিক ব্যবস্থায় আমলে না আসার চক্র নারীকে ঠেলে দেয় নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে। যে রোগের চিকিৎসা আশাপ্রদ ও সহজলভ্য, সে রোগটি ভয়ংকর ঘাতকরূপে দেখা দেয়। তাই স্তন ক্যানসার ঠেকানোর প্রথম পদক্ষেপই হলো সচেতনতা। নারীরানিজের সম্পর্কে নিজে সচেতন হোন, পরিবারের নারী সম্পর্কে অন্য সবাই সচেতন হোন, সর্বোপরি দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নারীর সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়েসচেতন হোক—এটাই আমার আশা।
মনে রাখুন উপসর্গগুলো :::::::
*স্তনে কোনো চাকা বা পিণ্ড দেখা দিলে:*গোসলের সময় মাসে অন্তত একবার হাত দিয়ে স্তন ও বগল পরীক্ষা করার সময় যদি হাতে কোনো চাকা অনুভব করা যায়,যা আগে কখনো ছিল না।
*এর আগে স্তনে টিউমারের চিকিৎসা হয়েছে—এমন কারও নতুন করে আবার কোথাও চাকা দেখা দিলে।
*চাকাটি খুব দ্রুত বড় হতে থাকলে।
*চাকাটি যদি স্তনের চামড়া বা স্তনবৃন্তের সঙ্গে ঘনভাবে সন্নিবেশিত থাকে।
*দুই স্তনের আকার ও আকৃতিতে অস্বাভাবিক গরমিল দেখা দিলে।
*পর পর দুটি মাসিকের পরও স্তনের চাকা চাকা ভাব অনুভূত হতে থাকলে।
*স্তনের সিস্ট ঘন ঘন দেখা দিলে।
*ফোঁড়া বারবার হতে থাকলে।
*স্তনে ব্যথা
*শুধু ব্যথা কোনো দুশ্চিন্তার বিষয় নয়, কিন্তু এর সঙ্গে চাকা, বিকৃতি বা যেকোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
*মেনোপজের পর কোনো নারীর এক পাশে অস্বাভাবিক ও স্থায়ী ব্যথা।
*যে তীব্র ব্যথা সাপোর্টিভ ব্রা বা ব্যথানাশক খেলেও দূর হচ্ছে না।
*স্তনবৃন্তের অস্বাভাবিকতা
*স্তনবৃন্ত থেকে রক্তক্ষরণ।
*দীর্ঘস্থায়ী অ্যাকজিমা বা ক্ষত।
*স্তনবৃন্ত ভেতর দিকে ঢুকে যাওয়া, দেবে যাওয়া বা একপাশে সরে যাওয়া।
*যেকোনো বয়সে বৃন্ত থেকে নিঃসৃত ক্ষরণ সর্বদা কাপড়ে লেগে থাকা।
*বগলের অস্বাভাবিকতা
*বগলে কোনো চাকা বা পিণ্ড অনুভূত হওয়া।
(লেখায় অনেক ভুলত্রুটি থাকতে পারে ক্ষমা করবেন।।।।।)
Top 10 best casino games with jackpot - DrMCD
উত্তরমুছুনThe 수원 출장샵 number one reason we recommend the 군포 출장샵 casino to our players is that they use real money casino games. Our website provides 남원 출장마사지 an exciting 1️⃣ The best casino games: 울산광역 출장안마 Betway💰 Top games offered: Betway 부산광역 출장안마